লাইফে এই প্রথম নতুন প্রিন্টার কিনেছেন কিংবা কিনতে যাচ্ছেন, কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নাই, এই বার্তা তাদের জন্য।
ঘুরে আসুন : ইংরেজিতে পাস ঠেকাই কে ? আসুন শুধুমাত্র একটি লেকচার শীট পড়েই ইংরেজিতে ১০০% পাসের নিশ্চয়তা অর্জন করি (৬ষ্ঠ থেকে – ডিগ্রী পর্যন্ত কাজে লাগবে)
বরাবরই দেখবেন বিক্রেতারা বলবেন— কার্টিজ এর কালি শেষ হলে ড্রাম লাগিয়ে নিলে বারবার কালি তোলার ঝামেলা থাকবে না। কার্টিজ এর কালি শেষ হলে এসে একটা ড্রাম লাগিয়ে নিয়ে যাইয়েন, ড্রাম আমাদের এখানেই পাওয়া যায়, দাম কম ধরবো, আর ওই পাশের দোকানে যে সেটিংয়ের কাজ করে ওকেও বলে দেবো, সেও কম ধরবে।ঘুরে আসুন : চাকরী করা ছাড়াও প্রচুর আয় করবেন যেভাবে!
বাহ্! কী দারুণ সুন্দর পরামর্শ। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলে। তারা যেটা বলে থাকে সেটা বাস্তবতার কথা নয়, সেটা ব্যবসায়ীক কথা। বাস্তবতা হলো এই যে, ড্রাম লাগানোর পর কেউই আর সেই প্রিন্টার দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারেন না। দুদিন পর থেকেই শুরু হর প্রিন্টারের নানান সমস্যা। এবং দেখা যায় শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় যে দুর্ঘটনাটা ঘটে তা হলো কার্টিজ নষ্ট হয়ে যাওয়া। এবার বদলাও কার্টিজ; একটি কার্টিজ এর দাম ১২০০/- টাকা। কয়েকদিন পর দেখা যায় অন্য কার্টিজটাও নষ্ট হয়ে যায়, সেটাও বদলাও। দুইটা কার্টিজ বদলানোর খরচ ২৪০০/- টাকা! অথচ বহুল ব্যবহৃত Canon Pixma iP 2772 মডেলের একটি নতুন প্রিন্টারের দামই ৩৩০০/- টাকা!ঘুরে আসুন : রসায়ন বিজ্ঞান - এইচএসসি
দেখা যাবে ঘন ঘন কালি তোলার ঝামেলা এড়াতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কথা শুনে আপনি পুরো প্রিন্টারটাই নষ্ট করে ফেললেন।কেন এমন হয়?
কার্টিজ এর কালি শেষ হলে সেখানে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কালি সিরিঞ্জ দিয়ে রিফিল করতে হয় কিন্তু ড্রামের সাথে কার্টিজের কালি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন থাকে, আর তাতে সবসময় উচ্চমাত্রার কালির চাপ থাকে। ফলে কার্টিজে সার্বক্ষণিক বিদ্যমান থাকা এই কালির চাপে কার্টিজের সেনসিটিভ কপাটিকা ল্যুজ হয়ে গিয়ে কালি পড়ে যেতে থাকে। এভাবে কার্টিজ নষ্ট হয়ে যায়।
ঘুরে আসুন : বাংলাদেশের সংবিধানের A to Z:
তাহলে কেন এটা ব্যবহার করা হয়?
কিছু কিছু কোম্পানির কিছু কিছু মডেলের দামি প্রিন্টারের সাথে ড্রাম লাগানোই থাকে। সেসব প্রিন্টার ড্রাম সিস্টেমেই তৈরি, এর কার্টিজ ভিন্নভাবে তৈরি, তাই এই জাতীয় সব চাপ সইতে পারে। কিন্তু যেসব প্রিন্টার সেই পদ্ধতির নয় এবং কার্টিজ সেনসিটিভ তাতে ড্রাম ব্যবহার করা বিধিসম্মত নয়। এসব প্রিন্টারের ইউজার মেন্যুয়াল এ-টু-জেট পড়ে দেখবেন সেখানে কোথাও এক্সট্রা ড্রাম লাগানোর কথা নাই, সেখানে সিরিঞ্জ দিয়ে কার্টিজে কালি রিফিল করার কথা বলা আছে এবং তার পদ্ধতি বর্ণনা করা আছে।
ঘুরে আসুন : শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ঃ গণিত বিগত বছরের পরীক্ষার প্রশ্নগুলোর সমাধান থেকে ধারণা নিতে পারেন।
তাহলে তারা কেন এমন বলে?
এটা হলো আমাদের ব্রেন ওয়াশ করে ব্যবসা করার কৌশল। একটা ড্রাম লাগাতে খরচ পড়ে ১২০০/- টাকার মতো; সেখানে ড্রাম এর দাম ১০০০/- এর মতো এবং সেটিং করার মেকানিক খরচ ২০০/- টাকা। এসব ড্রাম উক্ত ব্রান্ডের প্রিন্টারের কোম্পানি তৈরি করে না (তারা তো ড্রাম ব্যবহারই করতে বলে না, কারণ ড্রাম সেখানে সুইটেবল না), এসব ড্রাম তৈরী হয় দেশেই আর তা চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হয়। একটা ড্রামে ২০০/- টাকার মতো কালি থাকে। এর প্রকোষ্ঠ, সিপি ও পাইপলাইন মিলে সেটা তৈরির খরচ ধরলাম সর্বোচ্চ ২৫০/- টাকা। তাহলে কত হয়? ৪৫০/-; কোনো এ্যাডভারটাইজিং খরচ নাই, অথচ তা বিক্রি হয় ১০০০/- টাকায়। কী লাভ!
আর এই লাভ করতেই তাদের কৌশল হলো মনভুলানো কথা বলে আমাদের ব্রেন ওয়াশ করা।
লেখা: মোঃ মেহেদী হাসান,
লেখক, গবেষক ও সোশ্যাল ওয়ার্কার।
No comments:
Post a Comment