বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল | মহাবিশ্বের অজানা রহস্য : পর্ব - ২ - SIEC | Forward Thiking

Breaking

SIEC

Header ADS

Tuesday, April 21, 2020

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল | মহাবিশ্বের অজানা রহস্য : পর্ব - ২


৩। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল

ছোটবেলায় একদিন স্কুলের এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর কথা। আটলান্টিক মহাসাগরে নাকি খুব অদ্ভুত একটা জায়গা আছে। আজ পর্যন্ত যেখানে গিয়ে কেউ আর ফিরে আসেনি, কত জাহাজ যে নিখোঁজ হয়েছে। কত বিমান যে হদিস হারিয়েছে সেসবের কোন হিসাব নেই! কেন এমন হয় ? কেউ বললো, ”এলিয়েন থাকে ওখানে জানিস না?”, তো অন্যকেউ বললো, “আরেহ ! ওটা তো বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল না, বল শয়তানের ট্রায়াঙ্গেল!” – এসব রহস্যে ঘেরা কথা শুনতে শুনতে যখন আরেকটু বড় হলাম, তখন মাথায় ভূত চাপল বারমুডা রহস্যের একটা কিনারা করার। আর সেটা করতে গিয়ে যা জানলাম তা অবাক করার মতো।


 পৃথিবীর বুকে অজানা রহস্য ঘেরা যত স্থানের নাম সবার কাছেই জানা তার মধ্যে অন্যতম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। আজ পর্যন্ত যত গবেষণা হয়েছে কোনো কিছুতেই এ রহস্য উদঘাটনের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। মানুষ সর্বদা জ্ঞানপিপাসু তাই অজানাকে জানা আর নতুন কিছু প্রমাণের যে স্পৃহা তা সর্বদা বিজ্ঞানীদের মধ্যে পরিলক্ষিত হলেও তরুণ মহলে আমাদের কাছে তা সর্বদাই আকর্ষণীয় একটা বিষয় হয়ে থাকে।

ব্যাপারটা অনেকটা একই রকম। ঠিক গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের মতনই আরেকটা ট্রায়াঙ্গেল খুঁজে পাওয়া যায় সমূদ্রের ভেতরে। যেখানটায় একের পর এক ঘটে যেতে থাকে অদ্ভূত সব ঘটনা। হাওয়া হয়ে যেতে থাকে এক এক করে অনেক মানুষ, বিমান, জাহাজ- সবকিছু! কি এমন আছে ওখানে? কি ওটার রহস্য?

প্রথমেই বলে আসি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে। আমরা সকলেই জানি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল একটি ত্রিভুজাকৃতি জায়গা বিশেষ। যার এক পাশে রয়েছে ফ্লোরিডা, অন্যপাশে বারমুডা আর অপরপাশে আছে সান জুয়ান, পুয়ারতো রিকো। পৃথিবীর অন্য যতো রহস্যেঘেরা স্থান তার থেকে এই জায়গাকে গুরুত্ব দেবার মূল কারণ হল ভয়াল পরিবেশে নৌযান ও আকাশযানের বহু যাত্রীর অকাল প্রাণহানি। এ এমন এক জায়গা যেখানে একবার প্রবেশ করলে সেখান থেকে বের হবার বা কোনো তথ্য বের করে আনার কোনো অবকাশ নাই। অনেকে আবার এই জায়গাকে ডেভিল ট্রায়াঙ্গল ও ট্রাপিজিয়াম আকৃতির বলে থাকেন।


ঘুরে আসুন : নাদিম_সায়েন্স_ল্যাব



আজও জানতে পারেনি কেউ। শয়তানের ট্রায়াঙ্গেল নামে পরিচিত রহস্যময় স্থানটিতে ভিনগ্রহবাসীদের হাত আছে বলে মনে করেন অনেকে। নির্দিষ্ট করে কোন স্থানটিতে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল আছে সেটা বলা যায় না। তবে আটলান্টিক মহাসাগরের ভেতরেই কোনো একটা জায়গায় আছে সেটা। অনেকের অনেক মত আছে একে নিয়ে।


ঘুরে আসুন :মহাবিশ্বের অজানা রহস্য : পর্ব- ১



কটি ধারণা সবার মধ্যে প্রচলিত আছে যে, বহিঃবিশ্বের কোনো অজানা প্রাণীর বাস সেখানে, যারা সর্বদা বসে আছে আশেপাশের সবকিছু গ্রাস করে নেবার জন্য। ধারণামতে ভিনগ্রহের মানুষেরা পৃথিবীতে এসে এ স্থানটিকে তাদের ঘাঁটি বানিয়ে নেয় এবং এ অঞ্চলের ভিতরে প্রবেশকারী সকল কিছুর চিহ্ন তারা গায়েব করে দেয় যাতে কেউ তাদের ব্যাপারে কিছুই জানতে না পারে। মজার বিষয় হিসেবে এই জায়গাকে তুলনা করা যেতে পারে ব্ল্যাকহোলের সাথে। যেখানে একবার কেউ প্রবেশ করলে বের হওয়া তো দূরের কথা তার কোনো অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায় না।


তবে অনুসন্ধানকারী লেখক কুছে জানান, কোনো একটা মাত্র কারণকেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য বলে মনে করাটা বোকামি। এরচাইতেও বড় বোকামি হচ্ছে যতগুলো জাহাজ হারিয়েছে সেগুলোর সবগুলোকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের শিকার বলে ধরে নেওয়া। হতেও তো পারে সেটা অন্য কোনো কারণে হারিয়ে গেছে বা ধ্বংস হয়েছে।
 

ঘুরে আসুন :ফেইসবুক ছবিতে ট্যাগ হওয়া থেকে রক্ষা করুন নিজেকে

সর্বপ্রথম এই জায়গার আবিষ্কার করেন আমেরিকার উদ্ভাবক কলম্বাস। তার বর্ণনামতে, তার জাহাজের নাবিকেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পাড়ি দেবার সময় দেখেছিল আলোর নাচানাচি আর আকাশে ধোঁয়া। এছাড়া কলম্বাস আরো লিখেছেন যে এই জায়গায় এসে তার কম্পাসও ভুল নির্দেশনা দিচ্ছিলো। আজ পর্যন্ত অসংখ্য জাহাজ এবং উড়োজাহাজ মিলিয়ে গেছে এই ট্রায়াঙ্গলে যার কোনো চিহ্ন আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় এ পর্যন্ত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ২০ টি বিমান হারিয়ে গেছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে।

সর্বপ্রথম ৫ ডিসেম্বর, ১৯৪৫ সালে আমেরিকার পাঁচটি যুদ্ধবিমান ১৪ জনসহ মিলিয়ে যায় এই ট্রায়াঙ্গলে।

ফেইসবুক গ্রুপ :

ফেইসবুক গ্রুপ : বিজ্ঞানচিন্তা ও প্রযুক্তি জয়েন করুন এখানে ক্লিক করুন


সর্বশেষ তথ্যমতে খবর এসেছিল বিমানগুলো যখন এই অঞ্চলের খুব কাছাকাছি এসে পরে তারা বলছিলো তাদের সামনে খুবই ধোঁয়া, তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছেনা এবং তাদের শেষ কথা ছিলো ’আমাদের বাঁচাও’। এ ঘটনার পর একদল অনুসন্ধান দল সেখানে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু তাদের আজ পর্যন্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৯৪৭, ১৯৪৮, ১৯৪৯, ১৯৬২, ১৯৬৫, ২০০৫, ২০০৭ এবং ২০১৭ সালে ঘটে আরও বিমান দুর্ঘটনা। ১৮০০ সালে ঘটে প্রথম জাহাজ দুর্ঘটনা যেখানে প্রাণ হারায় ৯০ জনের মতো যাত্রী। এছাড়া ১৮১৪, ১৮২৪, ১৮৪০, ১৯১৮, ১৯২১, ১৯২৫, ১৯৪১, ১৯৬৩ এবং ২০১৫ সালে অসংখ্য প্রানহানি ঘটে এই ট্রায়াঙ্গলে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, আজ অব্দি প্রায় ১০০০ জনের মতো বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর মাঝে প্রান হারিয়েছেন, যা গড়ে প্রতি বছরে ১০ জনের সমান।
সর্বপ্রথম এই ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে একটি বই রচনা করেন লেখক ভিনসেন্ট এইচ গাদিস ১৯৬৫ সালে। বইটির নাম Invisible Horizon: True Mysteries of the Sea (1965)। এ বইয়ে তিনি নয়টি রহস্যে ঘেরা ঘটনার কথা বর্ণনা করেছেন। আজ পর্যন্ত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্যকে ঘিরে দুইটি ইংরেজি চলচিত্র নির্মাণ হয়েছে। একটি হলো Lost in the Bermuda Triangle (1998) ও আরেকটি হলো Bermuda Tentacles (2014)



তবে যে যাই বলুক, এখনো পর্যন্ত ব্যাপারটা ঠিক সেখানটাতেই আটকে আছে যেখান থেকে একদিন এটার শুরু হয়েছিল।

তথ্যসূত্রঃ গুগল, ইউটিউব


ফেসবুক পেইজ : নাদিম সায়েন্স ল্যাব
আমাদের ব্লগ আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: :   safollobd@gmail.com

No comments:

Post a Comment